আমরা এখনও প্রথম শিল্প বিপ্লবের আগেই পড়ে আছি: বিটিআরসি ডিজি

পৃথিবী চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে পৌঁছালেও আমরা এখনও প্রথম শিল্প বিপ্লবের আগেই পড়ে আছি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) সিস্টেম ও সার্ভিস বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ খলিল-উর-রহমান।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম আয়োজিত "ইন্টারনেট গভর্নেন্স অ্যান্ড সাইবার ল'স: বিল্ডিং মাল্টি-স্টেকহোল্ডার ডিজিটাল ফিউচার" শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক অডিটোরিয়ামে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের সিস্টেম ও সার্ভিস বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ খলিল-উর-রহমান বলেন, বর্তমান যে পোস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল যুগ এটা ইন্টারনেটনির্ভর। ইন্টারনেটকে সুষ্ঠু ধারায় ব্যবহার করতে হবে। আর এই ইন্টারনেট সচেতনতার জন্য দরকার ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন। ইন্টারনেট ব্যবহারে বিভিন্ন দেশের ইয়ুথ, আমলা, রাজনীতিবিদদের মধ্যে যে পরিমাণ সচেতনতা ও আগ্রহ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সেটি নেই। এই জায়গাগুলোতে আমাদেরকে উন্নতি করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে যত ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম আছে সকলে মিলে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামকে শক্তিশালী করা উচিৎ। ইন্টারনেটের মালিক সবাই। সুতরাং মাল্টি-স্টেকহোল্ডার যদি হতে হয় আমাদের সবাইকেই সচেতন হতে হবে এবং অংশগ্রহণ করতে হবে। তবে সব কিছু আইন করে হবে না। কিছু গাইডলাইন থাকবে সেগুলো মেনে চললেই সচেতনতা তৈরি হবে। ইন্টারনেট এখন মৌলিক চাহিদায় রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে মানুষ থাকতে পারবে কিন্তু ইন্টারনেট ছাড়া থাকতে পারবে না। সুতরাং ইন্টারনেট বন্ধ করার কোনও সুযোগই নাই। সুতরাং আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবেই এবং তার জন্য সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিকমিউনিকেশন ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পলিসি অ্যাডভাইজর ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি আইন সম্পর্কে বলেন, আমরা সাইবার সিকিউরিটি আইনকে সমৃদ্ধ করেছি সংজ্ঞার দিক থেকে, কারিগরি সক্ষমতার দিক থেকে এবং ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির দিক থেকে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে একটি কালো আইন ছিলও। এই আইনে শিশু, বৃদ্ধ, কিশোর, সাংবাদিক সবাইকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। হত্যা গুম খুন করা হয়েছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে আমরা আইনটাকে মানবিক করার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, আইনের যে ধারাগুলোতে মামলা করা হতো সেই ধারাগুলো নিয়ে পড়াশোনা করেছি। শব্দচয়ন ও ভাষাগত পরিবর্তনের মাধ্যমে আইনটাকে মানবিক করার চেষ্টা করেছি। এতে করে পূর্বের প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ মামলা খারিজ হয়ে যাবে। আমরাই প্রথম ইন্টারনেট প্রাপ্তিকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। এই সংস্কারের মাধ্যমে সাইবার স্পেস ব্যবহার করে যৌন হয়রানি বা নির্যাতনকে প্রথমবারের মতো আমরা শাস্তির আওতায় এনেছি।
অনুষ্ঠানে প্যানেল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের 'স্কুল অব ল' বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক সাইমুম রেজা তালুকদার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল নোমান, ডেইলি স্টারের সিনিয়র রিপোর্টার যাইমা ইসলাম এবং এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টারের (অ্যাপনিক) ইন্টারনেট রিসোর্স এনালিস্ট সুবাহ সামারুখ।