শিরোনাম

পরাধীন মনস্তাত্বিকতা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার

 প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন   |   মতামত

পরাধীন মনস্তাত্বিকতা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার

স্যার ডেকে সম্মান দেখানোর রীতিটি এসেছে বৃটিশ শাসনের সময় থেকে। যখন তারা আমাদের এই উপমহাদেশ শাসন করেছে, তখন তারা আমাদের প্রভু সেজে শাসন করেছে। আমাদের পূর্ব পুরুষরা একরকম বাধ্যই হয়েই  তাদের স্যার ডাকতেন, স্যার ডাকতেন তাদের নিয়োগ দেয়া আমলা-কামলা-পুলিশ-মিলিটারি সবাইকে। 

এখনো এদেশে স্যার না ডাকায় বহু জনগনের টাকায় বেতন পাওয়া কর্মচারী-কর্মকর্তা চাকুরেরা জনগনকেই নাস্তানুবাদ করেছেন এমন বহু ঘটনা সচরারচর দেখা যায়।

পরাধীন মনস্তাত্বিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা দরকার। আমাদের প্রত্যেকেরই আছে আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচার অধিকার। সম্মান আর প্রভুভক্তির মানসিকতার মাঝে ফারাক আছে, প্রভুভক্তি আশা করা মানুষেরাও এটা মানতে শিখুক। আমরা আর কত কলোনিয়াল মানসিকতা লালনকারী প্রশাসনযন্ত্রের কাছে নিজেদের আত্মসম্মানকে বিলীন করবো?

কোন সংবিধানে আছে ডিসি সাহেবকে আমাদের ডিসি স্যার ডাকতে হবে, কোন আইনে আছে ডাক্তার সাহেবকে আমার স্যার ডাকতে হবে? কোন উন্নত সমাজে এই রীতি আছে অন্তত সেটা জানতে মন চায়।

আমার বাংলাদেশে কন্সটেবলও আশা করে তাকে লোকে স্যার ডাকুক। যে মিলিটারির সাথে তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথচারীর কোনো সম্পর্ক নেই তাকেও তার শাসিত পরাধীন মন স্যার ডাকতে চায়। ধনী দেখলে স্যার ডাকতে হয় গরীবদের, টাই দেখলে স্যার ডাক চলে আসে লুংগিধারীর। বড় চেয়ার আমাদেরকে স্যার ডাকায়, এমনকি লেখকেরাও তাদের পাঠকের কাছে স্যার ডাক শুনে প্রীত হতে চান। এ পরাধীন মানসিকতার উত্তরাধিকার আমরা লালন করে চলেছি প্রায় তিনশ বছর ধরে।

যে পশ্চিমারা আমাদেরকে এসব শিখিয়েছিল, আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে চুপ রেখে, আমাদের সম্পদ নিয়ে চলে যেত, তারা নিজেদের সমাজেতো এই মানসিকতা চলতে দিতে পারেনি, তাহলে আমরা কেন সেটা চালাচ্ছি? অতীতে জনগনের টাকায় চাকরিবৃত্তি করে প্রভু হওয়ার অপচেষ্টা করে সফলও হয়েছিল, আমাদের অশিক্ষা আর অনৈক্য তাদেরকে সেকাজে সহায়তা করেছিল। 


মতামত এর আরও খবর: