শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকায় জাবিতে পথশিশুদের ঈদপোশাক বিতরণ

মোঃ নিশান খান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে একদিনের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়। বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের নতুন জামা উপহার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে দেশজুড়ে বিভিন্নস্থানে এই কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এবং সংগঠনের উপদেষ্টামন্ডলীসহ অতিথিদের উপস্থিতিতে সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুদের হাতে ঈদের নতুন জামা উপহার দেওয়া হয়।
লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘ ঢাকা জেলা শাখার সভাপতি ও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ সংগঠনটির সকল সদস্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের একদিনের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে শিশুদের মুখে হাঁসি ফুটাতে ঈদের এই নতুন জামা উপহার দিচ্ছেন। আগামী সাত দিনে ধারাবাহিক এই কার্যক্রমের মাধ্যমে এক হাজার সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে ঈদের নতুন জামা উপহার দিবেন তারা। লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল জানান, গত ১৪ বছর ধরে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সুুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাঠদান, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও ঈদের নতুন পোশাক উপহার বিতরণ করে আসছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী বা সংগঠন মানবতার কল্যাণে যেই উদ্যোগই গ্রহক করুক আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবসময়ই পাশে থাকার চেষ্টা করি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘ এই দিক দিয়ে এগিয়ে আছে। আশা করি, লাল-সবুজ উন্নয়ন সংঘের কাজগুলো দেশব্যাপী দ্রুতই ছড়িয়ে পড়বে।”
সমাপনী বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, সবার যদি ইচ্ছা থাকে তাহলে সমাজের কল্যাণে অনেক ভালো কাজ করা সম্ভব। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে সকল সমস্যা হয়তো আমরা দূরীকরণ করতে পারবো তা না, তবে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করতে হবে। সেই জায়গা থেকে লালসবুজ উন্নয়ন সংঘ নানাবিধ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং অন্যান্য সামাজিক সংগঠন গুলোও সকল ভালো কাজে এগিয়ে আসবে, সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে এই আশাবাদ ব্যাক্ত করছি।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক শামসুল আলম, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমির হোসেন ভূইয়া, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. নাসরীন সুলতানা ও সহযোগী অধ্যাপক তমালিকা সুলতানা।