দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত জাকসু ভবন, সংস্কারের দাবি শিক্ষার্থীদের

নিশান খান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই ২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে বহু প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন। তবে এরই মাঝে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে জাকসুর নিজস্ব ভবনটি—যেটি দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে অরক্ষিত ও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, জাকসু ভবনটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বাইরের নামফলকটি অস্পষ্ট ও মলিন; ভেতরে নেই কোনো প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র—চেয়ার, টেবিল, ডেস্ক বা বৈদ্যুতিক সংযোগের ব্যবস্থাও পুরোপুরি ঠিক নেই। পুরো ভবনটি পরিত্যক্ত ভবনের মতোই দেখা যায়, যেন বহু বছর ধরে কোনো ব্যবহারের চিহ্ন নেই। শুধু তাই নয়, সন্ধ্যার পর এই ভবন এলাকায় নিয়মিতভাবে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এতে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং ভবিষ্যতের জাকসু কার্যক্রম পরিচালনার উপযোগিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী এ পরিস্থিতিকে দুঃখজনক ও হতাশাজনক বলে মনে করছেন। জাকসু নির্বাচন ঘিরে যখন ক্যাম্পাসে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে, তখন এমন ভবনের বেহাল দশা নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনায় বড় প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহজাবিন সুলতানা বলেন, “জাকসু নির্বাচন আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একটা বড় ধাপ। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠানের ভবন যদি এতটা জরাজীর্ণ থাকে, তাহলে এটা শুধু অবহেলারই পরিচয় দেয়। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত এই ভবন সংস্কারের উদ্যোগ নিক।”
এ বিষয়ে উপাচার্য ড. কামরুল আহসান বলেন, ইতিমধ্যে জাকসু ভবন আমরা পরিদর্শন করেছি এবং নির্দেশনা দিয়েছি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে; এটি তো এখন পূর্ণনির্মাণ করা সম্ভব নয়। আস্তে আস্তে আমরা এটি প্রস্তুত করছি এবং জাকসুর অফিসের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছি।
মাদকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদকের বিষয়ে আমাদের আগে থেকেই সুনিদিষ্ট পদক্ষেপ আছে এটি চলমান প্রক্রিয়া। যদি এইরকম কোন অভিযোগ থাকে, প্রশাসন অভিযোগের প্রেক্ষিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থীরা দ্রুত ভবনটি সংস্কার করে কার্যকরভাবে ব্যবহারের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।