শিরোনাম

পঞ্চগড় জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

 প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৯ অপরাহ্ন   |   প্রবাস ও ভ্রমণ

পঞ্চগড় জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে পঞ্চগড় এক অন্যতম জেলা। বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলা বাংলা-বান্ধা জিরো পয়েন্ট এর জন্য এবং বাংলা-বান্ধা স্থলবন্দরের জন্য পঞ্চগড় জেলা বিখ্যাত। এছাড়া পঞ্চগড় জেলা কিছু দর্শনীয় স্থানের জন্য ও বিখ্যাত। 

পঞ্চগড় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের মধ্যে অবস্থিত। পঞ্চগড় জেলার আয়তন প্রায় ১,৪০৪.৬২ বর্গ কিলোমিটার। পঞ্চগড় হলো এক প্রাচীন জনপদ। প্রাকৃত ভাষার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পঞ্চগৌড় থেকে পঞ্চগড়ের নামকরন হয়। প্রথমে পঞ্চগৌড় নামকরন হয়, এরপর পঞ্চগোড় এবং এরপর পঞ্চগড় নামকরণ করা হয়। ভিতরগড়, মিরগড়, রাজনগড়, হোসেনগড়, দেবনগড় এই পঞ্চগড় অঞ্চলের পাঁচটি গড়ের সুস্পষ্ট অবস্থানের কারণেই নামটির উৎপত্তি হয়। ৫টি উপজেলার সমন্বয়ে পঞ্চগড় জেলাটির প্রশাসনিক অঞ্চল বিস্তৃত।পঞ্চগড় জেলায় ২টি পৌরসভা ও ৫টি উপজেলা ৫টি রয়েছে।তাছাড়া পঞ্চগড় ৪৩টি ইউনিয়ন আছে। এছাড়া ও করতোয়া, ডাহুক, মহানন্দা, তালমা, পাঙ্গা এবং চাওয়াই নদী ছাড়াও পঞ্চগড় ভূখন্ডে উপর দিয়ে ২২টি নদী প্রবাহিত হয়েছে।

পঞ্চগড় জেলার বিখ্যাত দর্শনীয় কিছু স্থান রয়েছে। তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ দর্শনীয় কিছু স্থানের নাম দেওয়া হলোঃ

মহারাজার দিঘী : ‘মহারাজার দিঘী’ একটি বিশালায়তনের জলাশয়। পঞ্চগড় জেলা সদর উপজেলাধীন অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত একটি বড় পুকুর মহারাজার দিঘী’নামে পরিচিত।দীঘিতে ১০টি ঘাট রয়েছে।

গোলকধাম মন্দির : পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাংগা ইউনিয়নের শালডাংগা গ্রামে অবস্থিত।মন্দিরটি অষ্টাদশ শতকের।এর স্থাপত্য কৌশল গ্রীক পদ্ধতির অনুরূপ

তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো : পঞ্চগর উপজেলা তেতুলিয়া অন্তর্ভূক্ত হলো তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো। পঞ্চগড় উত্তরাঞ্চলের সর্বশেষ জনপদ হিমালয়কন্যা।এবং পঞ্চগড় বাংলাদেশের তৃতীয় চা শিল্প হিসেবে প্রচলিত রয়েছে যা পঞ্চগড় উপজেলা তেতুলিয়া। 

রকস মিউজিয়াম : বাংলাদেশের একমাত্র পাথরের জাদুঘর/রকস মিউজিয়াম।১৯৯৭ সালে সম্পূর্ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে স্থাপন করা হয়।

ভিতরগড় : পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত ।পঞ্চগড় সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ভিতরগড়। বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল যার আয়তন ২৫ বর্গ কিলোমিটার

বার আউলিয়ার মাজার : পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুরে বার আউলিয়া মাজার অবস্থিত।১৯৯০ সালে বার আউলিয়ার মাজার পাকা করা হয়।

পঞ্চগড় এর এশিয়ান হাইওয়ে: এশিয়ান হাইওয়ে পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কি.মি.।পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় এই হাইওয়ে অবস্থিত।

মিরগড়: যে ৫টি জেলা নিয়ে পঞ্চগড়ের নামকরণ করা হয়েছে তারই মধ্যে অনতম মিড়গড়। পঞ্চগড় উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নে অবস্থিত মিরগড়।

মহারাণী বাঁধ: মহারাণী বাঁধ পঞ্চগড় জেলায় অবস্থিত। 

করতোয়া নদী: পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে করতোয়া নদী। বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। বাংলাদেশ অংশে নদীটির দৈর্ঘ্য ১৮৭ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৩৫ মিটার। “পাউবো” কর্তৃক করতোয়া নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ১৩। এই  নদীর নামটি দুটি বাংলা শব্দ, কর বা হাত এবং তোয়া বা পানির সমন্বয়ে গঠিত তাই তার নাম করতোয়া রাখা হয়েছে। এটা একটা হিন্দু আভিধানিক শব্দ।

পঞ্চগড় জেলার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো নাম উল্লেখিত করা হলো:

পঞ্চগড় জেলায় প্রথম বৃহৎ শিল্পের প্রসার ঘটে ১৯৬৯ সালে পঞ্চগড় সুগার মিলস লি: প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে এ জেলায় কৃষি ভিত্তিক অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। পঞ্চগড় সুগার মিলস লিঃ (১৯৬৯ সালে) জেমকন লিমিটেড (১৯৯৩ সালে) জেমজুট লিমিটেড (২০০৩ সালে) মার্শাল ডিস্টিলারী (১৯৯৬ সালে)

পঞ্চগড় জেলায় ১৮৬৫টি বিদ্যালয় ও ২২টি কলেজ রয়েছে।

পঞ্চগড় জেলা থেকে নিয়মিত বেশ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সাপ্তাহিক পঞ্চগড়বার্তা, পাক্ষিক খবরের কাগজ, অনলাইন পঞ্চগড় নিউজ, মাসিক কথা।

নদীমাতৃক আমাদের এই দেশের প্রকৃতি তার নিজের ইচ্ছায় নিজেকে রুপান্তরিত করেছে সবুজ শষ্য শ্যমলীমায়। ভরপুর করেছে কৃষি ও অন্যান্য জীবিকার উপকরণে।

প্রবাস ও ভ্রমণ এর আরও খবর: