উল্টো পথে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস

অস্বাভাবিক হারে দাম বাড়ার পর এবার দরপতনের মধ্যে পড়েছে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের শেয়ার। মাত্র ১০ দিনে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়ে প্রায় আড়াইগুণ হয়ে হওয়ার পর গত সপ্তাহজুড়ে দাম কমেছে। কিছুদিন আগে কোম্পানিটির শেয়ার বিনিয়োগকারীদের কাছে আগ্রহের শীর্ষে থাকলেও গত সপ্তাহে বেশ ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে পরপর দুই সপ্তাহ দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি ধরে রাখে কোম্পানিটি।
গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৩ টাকা ৫০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৩৪ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ২৩ টাকা ৬০ পয়সা। আগের গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ে ৫৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বাড়ে ৮ টাকা ২০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে বাড়ে ৮০ কোটি ৬৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।
তার আগের সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ে ৫৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বাড়ে ৫ টাকা ৬০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে বাড়ে ৫৫ কোটি ৮ লাখ ৭৮ হাজার ১৬০ টাকা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ৯ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ২৩ টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে। এ হিসাবে দুই সপ্তাহের প্রতিটি শেয়ারের দাম বাড়ে ১৩ টাকা ৮০ পয়সা। এই দাম বাড়ার হার ১৪০ দশমিক ৮২ শতাংশ।
অন্যভাবে বলা যায় কোনো বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির ১ লাখ টাকার শেয়ার কিনে দুই সপ্তাহ ধরে তার দাম ২ লাখ ৪০ হাজার ৮১৬ টাকা হয়ে যায়। দুই সপ্তাহের শেয়ারবাজারে লেনদেন হয় ১০ কার্যদিবস। এ হিসাবে ১০ দিনেই এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলসের শেয়ারে বিনিয়োগ করে টাকা প্রায় আড়াইগুণ হয়ে যায়। অথবা ১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ১০ দিনেই ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুনাফা পাওয়া যায়। এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর এখন কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমতে দেখা যাচ্ছে।
শেয়ারের এমন দাম বাড়া-কমা কোম্পানিটি ২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে ৫ শতাংশ নগদ এবং ২০২১, ২০২০, ২০১৯, ২০১৮, ২০১৭ ও ২০১৬ সালে ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৮৩ লাখ ৭১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তার কাছে ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ আছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশই আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ আছে।
এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলসের পর গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হারানোর তালিকায় ছিল বসুন্ধরা পেপার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দামও বাড়ে অঙ্কে বাড়ে। আগের সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ে ৪৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ, হামিদ ফেব্রিক্সের ১৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, জুট স্পিনার্সের ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ, নিউ লাইন ক্লোথিংয়ের ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামীক মিউচুয়াল ফান্ডের ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ইয়াকিন পলিমারের ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ দাম কমেছে।