ইফতারি তৈরি হবে কম তেলে

বাঙালি কম তেলে রাঁধতে জানে না, এ কথা স্বীকার করতে হবে গড়িমসি করে হলেও। বাড়িতে দাওয়াত রয়েছে মানে কড়াইয়ে নিত্যদিনের তুলনায় একটু বেশি তেল ঢেলে ফেলি। তেল জবজবে খাবার মানে কি সুস্বাদু? আর যদি হয়ও, তবে তা কোনোভাবেই স্বাস্থ্যকর নয়। আমাদের দেশে রোজায় যে ধরনের ইফতারি তৈরি হয়, সেগুলোর বেশির ভাগ ভাজাপোড়া। তবে এবারের রোজায় একটু চেষ্টা করে দেখুন না খানিকটা কম তেলে খাবার প্রস্তুত করা যায় কি না। তাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাওয়া যাবে, সঙ্গে অর্থেরও অপচয় কমবে। কম তেলে রান্না করার কিছু উপায় চাইলে মেনে চলতে পারেন।
বড় বোতল থেকে ফ্রাই প্যান বা কড়াইয়ে তেল ঢাললে বেশি খরচ হয়। বড় বোতল থেকে প্রথমে একটি ছোট বোতলে তেল ঢেলে নিন। তারপর চেষ্টা করুন তা দিয়ে রান্না শেষ করতে। খাবারের মেনুতে ভাজার পরিমাণ কম রাখুন। যেকোনো ভাজায় তেল বেশি ব্যয় হয়। তা ছাড়া তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সরাসরি বোতল থেকে ফ্রাই প্যান বা কড়াইয়ে তেল না ঢেলে তাতে ব্রাশ দিয়ে প্রলেপ দিন। এতে কম তেলে স্বাস্থ্যকর রান্না হবে, আবার খরচও কমবে।
তেল কম ব্যবহার করার এটি সবচেয়ে সহজ উপায়। কোনো কিছু ভাজার সময় ফ্রাই প্যান বা কড়াই ভালোভাবে গরম করে অল্প তেল ছড়িয়ে দিন। এরপর ভাজার জন্য খাবারগুলো বসিয়ে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। তবে একটু সময় লাগলেও কম তেলে সুন্দরভাবে ভাজা হয়ে যাবে। আলুর চপ, পেঁয়াজু, কাবাব, চিকেন ফ্রাইয়ের মতো খাবার সাধারণত ডুবো তেলে ভাজা হয়। কিন্তু যেসব ভাজা খাবারে বেসন ব্যবহার করা হয়, সেগুলোয় বেসনের পরিবর্তে অ্যারারুট কিংবা কর্নফ্লাওয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে খাবার তেল বেশি শুষে নেবে না।
ভারী স্টেইনলেস স্টিল প্যান বা লোহার প্যান ব্যবহার করুন। এগুলো রান্নার আগে ভালোভাবে গরম করে নিলে হবে। এ ছাড়া সিরামিক টাইটেনিয়ামের প্যান হতে পারে ভালো অপশন। এগুলো তেল ছাড়া রান্নার জন্য জুতসই।
ভুনা ডাল, কম ঝোলের তরকারি, চচ্চড়ি কিংবা শুকনো খাবার রান্নার জন্য চ্যাপ্টা তাওয়া ব্যবহার করতে পারেন হাঁড়ির নিচে। এতে চুলার আঁচ সরাসরি হাঁড়িতে লাগবে না। ফলে তেল কম দেওয়ায় খাবার পুড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকবে না।
ভাজাভুজির জন্য এয়ার ফ্রায়ারের মতো গ্যাজেট ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে তেল কম ব্যবহার করে কিংবা ব্যবহার না করেও রান্না করা যায়। পাশাপাশি স্বাদ অনেকটা ঠিক থাকে।