শিরোনাম

সমর্থকদের প্রত্যাশায় চাপ নিচ্ছেন না হামজা

 প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন   |   ফুটবল

সমর্থকদের প্রত্যাশায় চাপ নিচ্ছেন না হামজা

হামজা দেওয়ান চৌধুরীর কোনো ক্লান্তি নেই, হাসি যেন তার মুখে সব সময়ের জন্য স্থায়ী করে দিয়েছেন স্রষ্টা। রোববার (১৬ মার্চ) চ্যাম্পিয়নশীপের ম্যাচে শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে হাইভোল্টেজ ডার্বি ম্যাচে জিতেই ধরেছিলো দেশের পথ। ১৬ ঘণ্টা সফর শেষে মাতৃভূমিতে এসেছেন। তারপর ব্যস্ত তিনি। বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না বললেই চলে। 

সমর্থক-গণমাধ্যমের চাপে কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম নিবে সেই সময়টা অবদি পাননি হামজা। তবুও তার কোনো অভিযোগ নেই। সবার এমন তাকে নিয়ে উন্মাদনা বেশ উপভোগ করছেন হামজা। পরিচিত অপরিচিত যেই তার নাম ধরে ডাক দেয় তার দিকেই তাকিয়েই দেন চওড়া হাসি। তবে হামজা এটাও জানেন যে, তার কাছে আসলে দেশের মানুষের প্রত্যাশা কী, কিন্তু এসব তিনি চাপ হিসেবে নিচ্ছেন না বরং তিনি বর্তমানে প্রচুর ভালোবাসা অনুভব করছেন এবং তার লক্ষ্য হলো দলকে সাহায্য করা ও যতটা সম্ভব উন্নতি করা।

ক্রিকেটে হোক কিংবা ফুটবলে ভারত-বাংলাদেশ লড়াই মানেই জমজমাট উত্তেজনা। সেই ধারাবাহিকতায় ফের একবার হাইভোল্টেজ ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। তবে প্রতিবারের তুলনায় এবারের ম্যাচ ঘিরে রয়েছে বাড়তি এক উন্মাদনা। কেননা এই ম্যাচের আগে লাল-সবুজের শিবিরে যোগ দিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় হামজা। সবার প্রত্যাশা তার দাপটেই ভারতকে এবার হারিয়ে আসবে জামাল বাহিনী। সবাই ভরসা রাখছে হামজার ওপর। যেখানে হামজার এখনো বাংলাদেশের ফুটবলে অভিষেকও হয়নি। স্কোয়াডের সঙ্গেও কথা হয়েছে গতকাল প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই এমন একজনের ওপর সমর্থকদের এত প্রত্যাশা চাপ হিসেবেই কাজ করে। তবে হামজা এসবকে হাল্কাভাবেই নিচ্ছেন। 

গতকাল টিম হোটেলে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'না, আলহামদুলিল্লাহ, আমি কোনো চাপ অনুভব করছি না। আমি এখন প্রচুর ভালোবাসা অনুভব করছি। আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দলকে সাহায্য করা এবং যতটা সম্ভব উন্নতি করা।' 


এসময় দেশের ফুটবল দলের প্রতি নিজের প্রত্যাশা নিয়ে হামজা বলেন, 'আমার কোনো নির্দিষ্ট প্রত্যাশা নেই। তবে আমি অনেক আশাবাদী এবং খুবই উত্তেজিত। কোচের সঙ্গে আমি কয়েক সপ্তাহ ধরে কথা বলেছি এবং তিনি আমাকে অনেক ভিডিও দেখিয়েছেন। দলের কৌশলগত দক্ষতা দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি, বিশেষ করে তারা প্রতিপক্ষের ওপর কীভাবে আক্রমণ করছে। আমি আশাবাদী যে, আমি দলে কিছু যোগ করতে পারব। তবে আমি কোনো নির্দিষ্ট প্রত্যাশা রাখছি না। কারণ আমি ভিন্ন একটি লিগ থেকে এসেছি, ভিন্ন ধাঁচের ফুটবল খেলেছি। কিন্তু এখানে জামাল এবং অন্যান্য অধিনায়কেরা আমার চেয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অনেক বেশি অভিজ্ঞ। অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি তাদের কাছ থেকে শেখার জন্যও এখানে এসেছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সফল হবো এবং ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে চাই।' 

হামজার জন্ম কিংবা বেড়ে ওঠা দুটোই হয়েছে ইংল্যান্ডে। ফুটবলের হাতে খড়িও সেখানেই। খেলেছেন দেশটির বয়সভিত্তিক দলেও। সেই অনুসারে তার খেলার কথা ছিল ইংল্যান্ডের হয়েই। তবে সেটা তিনি করেননি। ছুটে এসেছেন মাতৃভূমির টানে। তবে যদি সেখানে খেলার সুযোগ পেতেন তাহলে কি হামজা আসতেন র‍্যাকিংয়ের ১৮৫ নম্বর দলের হয়ে খেলতে? জবাবটা হামজাই দিয়েছেন। বলেন, 'হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি সবসময় এটি নিয়ে চিন্তা করেছি। আমার পরিবার আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এবং তারাই আমাকে বাংলাদেশ দলে খেলার জন্য উৎসাহিত করেছে। কিন্তু যদি সুযোগ আসতো (ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার), তাহলে আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হতো। আমার পরিবার আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এবং তারাই আমাকে বাংলাদেশ দলে খেলার জন্য টেনে এনেছে।' 


এসময় কেন বাংলাদেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটিও জানিয়ে দেন এই মিডফিল্ডার। বলেন, 'গত কয়েক বছর ধরে আমি এই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। তবে যখন নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন তিনি আমাকে একটি পরিকল্পনার কথা বলেন। তিনি আমাকে কোচের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন এবং আমি তখন বুঝতে পারি যে, এখানে একটি ভালো প্রক্রিয়া আছে। আমি দেখতে পাই যে, দলটি সফল হতে চায় এবং এটি বেশ ভালোভাবে সংগঠিত। তাই আমি নিশ্চিত হয়ে যাই যে, এটি আমার এবং আমার পরিবারের জন্য একটি স্বাচ্ছন্দ্যজনক সিদ্ধান্ত হবে। যখন আমি কোচ এবং সভাপতির সঙ্গে কথা বলি, তখন তারা আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস জোগান।'


ফুটবল এর আরও খবর: