সরফরাজকে অন্যায়ভাবে বাদ দিয়েছে ভারত! যা বললেন গাভাস্কার

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ভারতীয় স্কোয়াডে রাখা হয়নি সরফরাজ খানকে। দলে ফেরানো হয়েছে সর্বশেষ ২০১৭ মার্চে টেস্ট খেলা ব্যাটার করুণ নাইরকে। এছাড়া প্রথমবারের মতো স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন শাই সুদর্শন। দুই অভিজ্ঞ রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির অবসরের পর অনেকগুলো বড় পরিবর্তন এসেছে ভারতীয় দলে। নতুন অধিনায়ক করা হয়েছে শুবমান গিলকে। তার সহকারী করা হয়েছে রিশাভ পান্ত। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে গিলের নেতৃত্বে ভারতীয় দলের নবযাত্রায় সরফরাজের দলে জায়গা না পাওয়াকে অস্বাভাবিক মনে করছেন সমর্থকদের কেউ কেউ। ভারতীয় দলের নির্বাচক কমিটির এই সিদ্ধান্তকে অস্পষ্ট ভাষায় অন্যায়ও বলছেন তারা। বহু বছর ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেটে পরিশ্রমের পর গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতীয় দলে অভিষেক হয় সরফরাজের। এরপর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজ খেলেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে খেলার সুযোগ পাননি এবং পরে সম্পূর্ণভাবে দল থেকে বাদ পড়েন।
সরফরাজ ভেবেছিলেন ইংল্যান্ড সিরিজ দিয়ে ফের জাতীয় দলের সাদা জার্সিতে ফিরবেন। সেই লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রায় ১০ কেজি ওজনও কমিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার পরিকল্পনার কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। এখন ভক্তদের কারো কারো প্রশ্ন, সত্যিই কি সরফরাজের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে? আসলে এই প্রশ্নের উত্তর সোজাসোজি দেওয়া বেশ মুশকিল। তবে এ বিষয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার সুনিল গাভাস্কার।গাভাস্কার ইন্ডিয়া টুডে-কে বলেন, ‘এটাই ক্রিকেটের কঠিন দিক। যখন সুযোগ আসে, আপনাকে নিজের জায়গা নিশ্চিত করতে হবে। যদি সেঞ্চুরিও করেন, এরপরের ইনিংসে নামার সময় মাথায় রাখা চলবে না যে আগের ম্যাচে শতরান করেছেন। আবার চোখে চোখে রান তুলতে হবে। আপনাকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ কাউকে দেওয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে যে, আপনি নিজেকে কীভাবে অপরিহার্য করে তুলবেন। আপনাকে বারবার দরজায় কড়া নাড়তে হবে, দরজা ভেঙে ঢুকতে হবে।’অস্ট্রেলিয়া সফরের পর সরফরাজকে বাদ দেওয়াকে ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলেও মন্তব্য করেন গাভাস্কার। কারণ চোটের কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্ম দেখানোর সুযোগই পাননি সরফরাজ।
গাভাস্কার বলেন, ‘আমার মতে, এটা কঠিন সিদ্ধান্ত। কারণ অস্ট্রেলিয়া সফরের পর কোনো লাল বলের ম্যাচ হয়নি। রঞ্জি ট্রফি ছিল, কিন্তু তখন সে (সরফরাজ) চোটে পড়েছিল। ফলে খেলার সুযোগই মেলেনি। তাই ফর্ম দেখানোর কোনো সুযোগ ছিল না।’‘আপনাকে এমন পারফরম্যান্স করতে হবে যাতে বাদ দেওয়ার সাহস না থাকে। আমরা আগেও দেখেছি, কোনো সিরিজ হারলে সাধারণত ১৩, ১৪ বা ১৫ নম্বর খেলোয়াড়দেরই বাদ দেওয়া হয়। তাই সুযোগ পেলে কাজে লাগাতেই হবে’-যোগ করেন গাভাস্কার। শনিবার প্রেস কনফারেন্সে ভারতীয় দলের প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার জানান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরির পর আর রান না পাওয়াই সরফরাজকে বাদ দেওয়ার পেছনে মূল কারণ।আগারকার বলেন, ‘মাঝেমধ্যে আপনাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সরফরাজ প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিল, তারপর রান পায়নি। অনেক সময় টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেয় দলের সেরা স্বার্থে। কারও জন্য সেটা অন্যায় হতেই পারে, আবার কারও জন্য সঠিক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলটাই মুখ্য।’ উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের অক্টোবরে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন সরফরাজ। এরপর ৪টি ইনিংস খেললেও ২০ রানের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি তিনি।