শিরোনাম

বিতাড়িত শক্তির ব্যাপারে পাহারাদারের ভূমিকায় থাকতে হবে

 প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন   |   রাজনীতি

বিতাড়িত শক্তির ব্যাপারে পাহারাদারের ভূমিকায় থাকতে হবে

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের একটাই উদ্দেশ্য- একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ করা। এ কাজের জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠতে হবে। জামায়াতকে দেশ গড়ার দায়িত্ব দিলে একটি বৈষম্যহীন মানবিক রাষ্ট্র উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে নগরীর খানজাহান আলী রোডের তারের পুকুরস্থ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরীর কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। গোলাম পরওয়ার বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আমাদের সবগুলো অফিস সিলগালা করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের নেতাকর্মীদের ঘর থেকে তুলে নিয়ে গুম খুন নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের নেতাদেরকে বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের প্রতি প্রতিশোধে বিশ্বাসী নই। তবে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনা দরকার। তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা ময়দানে ফেরার যে তৌফিক দিয়েছেন তার জন্য শুকরিয়া হিসেবে আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকব। যে শক্তি বিতাড়িত হয়েছে তাদের ব্যাপারে পাহারাদারের ভূমিকায় থাকতে হবে। তারা যেন দেশে ঢুকে আবার অন্যায় করতে না পারে। তাদের এখন একটাই পরিকল্পনা, কীভাবে বাংলাদেশের এই পরিবেশকে নস্যাৎ করে সারা দুনিয়াকে দেখানো যায় যে বাংলাদেশ অচল হয়েছে। গোলাম পরওয়ার বলেন, আজকে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর যে কার্যালয় উদ্বোধন হলো এখানে কুরআন-হাদিসের চর্চা হবে। অন্য কোনো দলীয় কার্যালয়ের মতো একটি আড্ডা খানায় পরিণত হবে না। এখানে কুরআন-হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য পড়ে গবেষণা কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে একটি মডেল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য একদল আদর্শবাদী ও চরিত্রবান লোক তৈরির কোনো বিকল্প নেই। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী সংগঠন। জামায়াত দেশকে একটি মডেল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এ মহতি কাজ সম্পাদনের জন্য একদল আদর্শ ও চরিত্রবান লোক তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে এমন একটি জনগোষ্ঠী তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি যারা দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠায় যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বছর ঘুরে আবারো মুমিনের জীবনে উপস্থিত হয়েছে পবিত্র রমযান। একজন মুসলিমের জন্য রমযান মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আমলের মাস। এটি আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য, সংযম, ত্যাগ ও অপরের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের মাস। অন্যান্য মাসে আমল-ইবাদাত বা ভালো কাজ করলে যে পরিমাণ সওয়াব হয়, রমযান মাসের আমলে তার সত্তর গুণ বেশি সওয়াব হয়। রমযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মানবতার সেবা করা। এই মাস আমাদের আত্মশুদ্ধির পাশাপাশি অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল, ভালোবাসা প্রকাশ এবং সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং তাদের প্রয়োজন মিটাতে উদ্বুদ্ধ করে। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মহানগরীর নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, সেক্রেটারি রাকিব হাসান, মাওলানা শেখ ওয়ালিউল্লাহ, ইকবাল হোসেন, মীম মিরাজ হোসাইন প্রমুখ।  অনুষ্ঠানে কুরআন তেলাওয়াত করেন হজরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলান আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস।  দীর্ঘ ৯ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে এবং হামলা মামলায় জামায়াত নেতৃবৃন্দ অফিসে নিয়মিত বসতে পারেনি। পুলিশ অফিসটি বন্ধ করে দিয়েছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। 

রাজনীতি এর আরও খবর: